বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪

 বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪|how to open bKash agent accaunt 2024


বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।
বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম।





আমরা অনেকেই আছি যারা নতুন করে নিজের একটা ব্যবসা তৈরি করতে চাই। কিন্তু কোন ব্যবসা করলে ভালো হবে তার আইডিয়া খুঁজে বের করা খুবই মুশকিল। আবার নতুন ব্যবসার আইডিয়া খুঁজে পেলেও বাজেট কম থাকার কারনে আগানো যায় না। যারা এই রকম দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভুগছেন তাদের বলবো সাধ্যের মধ্যে যে কয়টি ব্যবসা আইডিয়া রয়েছে তার মধ্যে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা অন্যতম। আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে আমাদের আর্টিকেলে পৌছান তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে বিকাশ এজেন্ট কিভাবে হবেন এবং বিকাশ এজেন্ট রেজিষ্ট্রেশন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 

২০১১ সালে চালু হওয়া বিকাশ বর্তমানে বাংলাদেশের যে কয়টি ইলেক্ট্রনিক মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে তার মধ্যে সবার উপরে রয়েছে। বিকাশের এজেন্টরা বিকাশ এবং গ্রাহকদের মধ্যে লেনদেনের মধ্যমণি হয়ে পরস্পরের সাথে বন্ধন ঘরে তোলে। অর্থাৎ গ্রাহকরা ক্যাশ আউট এবং ক্যাশ ইন বিকাশ এজেন্টের মাধ্যমে করবে।আর বিকাশ এজেন্ট এর মাজখানে থেকে একটা নির্দিষ্ট প্রফিট পাবে।


বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি লাগবে

  • একটি দোকান বা দোকানের নাম।
  • দোকানের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স। 
  • টিন সার্টিফিকেট। 
  • সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবি।
  • একটি সক্রিয় সিম যেটা দিয়ে আপনার এজেন্ট ব্যবসা পরিচালনা করবেন।


একটি দোকান বা দোকানের নাম 

আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হতে চান তাহলে আপনার প্রথম শর্ত হবে একটি দোকান থাকা। যেহেতু আপনি ব্যবসার উদ্দেশ্যে বিকাশ এজেন্টকে বেছে নিয়েছেন তাই প্রথমে আপনার একটি দোকান থাকতে হবে।

দোকানের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স 

আপনি যে কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই দেননা কেনো আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের প্রথম শর্ত হলো একটি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স থাকতে হবে। বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনার দোকানের ট্রেড লাইসেন্স এর প্রয়োজন পড়বে। তবে খেয়াল রাখতে হবে,আপনার দোকানের ট্রেড লাইসেন্স এর নামের সাথে এজেন্টে আবেদনকারীর নাম যেনো এক থাকে। দোকানের জন্য একটি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স আপনার নিকটস্থ ইউনিয়ন পরিষদ/সিটি কর্পোরেশন থেকে খুব সহজেই নিতে পারবেন। 


টিন সার্টিফিকেট 

বিকাশ এজেন্ট খোলার জন্য টিন সার্টিফিকেট বা Taxpayer's Identification Number এর প্রয়োজন পড়তে পারে। যদি এটা চাওয়া হয় তাহলে অনলাইন থেকে খুব সহজেই টিন সার্টিফিকেট বানিয়ে নিতে পারবেন। 

পাসপোর্ট সাইজের ছবি

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবির প্রয়োজন পড়বে।

একটি সক্রিয় সিম

বিকাশ এজেন্ট হতে হলে একটি সক্রিয় মোবাইল সিম কার্ড থাকতে হবে। কারন বিকাশ এজেন্টের সকল ব্যবসা বা লেনদেনের জন্য এজেন্টে একটি সক্রিয় এজেন্ট সিমের প্রয়োজন পড়বে। এই সিমের নাম্বার এজেন্টের বিকাশ এজেন্ট নাম্বার হবে।


বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য আপনাকে বিকাশের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে বিকাশ ফর্ম এর মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। তাই বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আমাদের বিকাশ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে যেতে হবে। ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর আপনার সামনে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার জন্য একটি আবেদন ফর্ম চলে আসবে।নিচে কোন বক্সে কি লিখবেন সেটা দেওয়া হলোঃ-

  • দোকানের নামঃ এই স্থানে এজেন্টের জন্য আবেদনকারীর দোকানে নাম দিতে হবে।যেমনঃ হাসান টেলিকম কর্ণার।
  • জেলা নির্বাচন করুনঃ এই স্থানে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে স্থানে রয়েছে সেই জেলার নাম দিতে হবে।
  • এলাকা নির্বাচন করুনঃ এই স্থানে আপনার দোকান যেই এলাকায় রয়েছে সেই এলাকার নাম দিবেন।
  • যোগাযোগ করবেন যার সাথেঃ এখানে আপনার দিবেন যাতে করে বিকাশ অফিসের লোকজন আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারে।
  • ফোন নাম্বারঃ এখানে এজেন্টে আবেদনকারীর ফোন নাম্বার দিতে হবে।
  • ইমেইলঃ এখানে আপনার একটি সক্রিয় ইমেইল দিবেন যার মাধ্যমে বিকাশের লোকজন আপনার সাথে যোগাযোগসহ নানা বিষয় মেইলের মাধ্যমে জানাবে।
  • অতিরিক্ত তথ্য যা আপনি জমা দিতে চানঃ এখানে আপনি আপনার সম্পর্কে অতিরিক্ত কিছু তথ্য দিয়ে দিবেন।
  • আপনার কি জাতীয় পরিচয়পত্র আছেঃ এই স্থানে আপনার যদি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি কার্ড থাকে তাহলে "হ্যা" অপশনে ক্লিক করবেন।যদিও এটি অটোমেটিকভাবে "হ্যা" অপশন থাকে।
  • আপনার কি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স আছেঃ আপনার দোকানের যদি একটি বৈধ ট্রেড লাইসেন্স থাকে তাহলে আপনি "হ্যা" অপশন সিলেক্ট করবেন।তবে এটিও ঠিক একইভাবে অটোমেটিক সিলেক্ট থাকে।
  • ট্রেড লাইসেন্স নাম্বারঃ এই স্থানে আপনার দোকানের বৈধ ট্রেড লাইসেন্সটি দিবেন।
  • ট্রেড লাইসেন্স মেয়াদোত্তীর্ণের তারিখঃ এই বক্সে আপনাকে ট্রেড লাইসেন্স এর মেয়াদ কত তারিখে শেষ সেটা দিতে হবে।
  • আমি রোবট নইঃ আমি রোবট নই এই এই বিকাশকে জানতে আমি রোবট নয় এ টিক দিন।
উপরের ফরমে দেওয়া সকল তথ্য ভালোভাবে যাচাই করার পর সব কিছু ঠিক ঠাক থাকলে "জমা দিন" বাটনে ক্লিক করে পূরণকৃত ফর্মটি বিকাশের অফিসিয়ালে সাবমিট হয়ে যাবে। "ফর্ম" জমা দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই বিকাশ প্রতিনিধি দল আপনার সাথে দেখা করবে।

বিকাশ অফিস থেকে এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম 

বিকাশ অফিম থেকে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার জন্য প্রথমে আপনাকে 16247 নাম্বারে কল করে বিকাশ অফিসের লোকেশন যেনে নিতে হবে।এরপর বিকাশ এজেন্ট খোলার জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নিয়ে বিকাশ অফিসে যেতে হবে। ওক্ত লোকজন আপনার কাগজপত্র দেখে বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানাবে।


বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধা

বিকাশ এজেন্টদের বিকাশ বাড়তি অনেক সুবিধা দিয়ে থাকে।
  • আপনি যেকোনো ব্যবসার সাথে একটি বাড়তি আয়ের পথ পেলেন।
  • প্রতি লেনদেনে একটি নির্দিষ্ট কমিশন পাওয়া। 
  • আপনি এজেন্ট বিদেশ বিল দিলে সেটা থেকেও কমিশন পাওয়া। 
  • একজন নতুন গ্রাহককে প্রতি বিকাশ একাউন্ট খোলার জন্য আলাদা করে ৫০ টাকা পাওয়া। 
  • প্রতিমাসে টার্গেট পূরণে রয়েছে ইনসেন্টিভ বোনাস।

বিকাশ এজেন্ট কমিশন

আপনি যদি বিকাশ এজেন্ট হন তাহলে আপনার প্রধান আয় বা কমিশন আসবে বিকাশ এজেন্ট কমিশন থেকে। বিকাশ এজেন্টের কমিশন সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তন হয়ে থাকে।
 একজন বিকাশ এজেন্টকে মূলত ২ ভাবে লেনদেনের ওপরে ভিত্তি করে তার প্রাপ্ত কমিশন দেওয়া হয়।
  • বিকাশ এজেন্ট অ্যাপস ব্যবহার করে।
  • ইউএসডি পদ্ধতিতে 

বিকাশ এজেন্ট অ্যাপস ব্যবহার করে এজেন্ট কমিশন 

নিচে বিকাশ এজেন্ট অ্যাপস ব্যবহারকারীর কমিশন দেওয়া হলোঃ-
  • প্রতি হাজারে= ৪.১০ টাকা
  • প্রতি দশ হাজারে= ৪১ টাকা

ইউএসডি পদ্ধতিতে বিকাশ এজেন্ট কমিশন

বিকাশ ইউএসডি পদ্ধতিতে *২৪৭# ডায়াল করে নিচে কমিশন উপভোগ করুনঃ-
  • প্রতি হাজারে= ৪.৩০ টাকা।
  • প্রতি দশ হাজারে=৪৩ টাকা


রিশেষে 

এই আর্টিকেলে আমরা বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খুলতে কি কি প্রয়োজন,বিকাশ একাউন্ট খোলার নিয়ম,বিকাশ অফিস থেকে এজেন্ট খোলার নিয়ম, বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার সুবিধা,কমিশন ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। এরপরও যদি বিকাশ এজেন্ট একাউন্ট খোলার নিয়ম ২০২৪|how to open bkash agent accaunt 2024 বিষয়ে কোনো কিছু জানার থাকে তাহলে নিচের কমেন্ট বক্সে কমেন্ট করে জানাতে পারেন। 

FAQ- প্রশ্নোত্তর

বাংলাদেশে কবে বিকাশের পথচলা শুরু হয়েছে?

উত্তরঃ ২০১১ সাল থেকে।

বিকাশ এজেন্ট হাজারে কয় টাকা কমিশন দেয়?

উত্তরঃ প্রতি ১ হাজারে ৪ঃ৩০ টাকা

বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি লাগে?

উত্তরঃ বিকাশ এজেন্ট হতে একটি দোকান বা দোকানের নাম,দোকানের নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স, টিন সার্টিফিকেট,সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের ৪ কপি ছবি, একটি সক্রিয় সিম যেটা দিয়ে আপনার ব্যবসা পরিচালনা করবেন।

বিকাশ নিচের কোনটির প্রতিষ্ঠান

উত্তরঃ বিকাশ একটি ব্রাক ব্যাংক প্রতিষ্ঠান।




আপনার জন্য প্রয়োজনীয় কিছু আর্টিকেলঃ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url